কলকাতা: শিক্ষকদের মর্জিমাফিক নয়, প্রয়োজনে বদলি হবে দূরের স্কুলেও। শিক্ষক বদলি নিয়ে এবার কড়া হাইকোর্ট। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে এক শিক্ষকের বদলি সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে এই মামলার শুনানি চলাকালীন, তিনি মন্তব্য করেন, ‘কোনও জঙ্গল আইন চলতে পারে না। যত শিক্ষক বদলির মামলা আছে, এবার থেকে নির্দিষ্ট আইন প্রয়োগ করেই হবে। কলকাতার শূন্য ছাত্রের স্কুলের শিক্ষককে হাওড়ায় যেতেই হবে’।
শিক্ষক বদলির ক্ষেত্রে ‘প্রশাসনিক বদল’ সংক্রান্ত যে গাইডলাইন তাতেই মান্যতা আদালতের। অর্থাৎ এই আইন অনুযায়ী, যে কোনও শিক্ষককে প্রয়োজনে যে কোনও জায়গায় বদলি করতে পারবে শিক্ষা দপ্তর। কলকাতায় যদি কোনও স্কুলে ছাত্র না থাকে, তাহলে সেক্ষেত্রে শিক্ষককে অন্য জায়গায় যেতে হবে। শিক্ষা দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়ার পর সাতদিনের মধ্যে তা পালন করতে হবে। শিক্ষক যদি না পালন করেন তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে শিক্ষা দপ্তর।
পুরুলিয়ায় এক স্কুলের শিক্ষক বদলি মামলায় হাইকোর্ট এবার কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। গত মাসে এই শুনানিতে ভর্ৎসনার মুখে পড়েন মামলাকারীরা। পড়ুয়াদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে সরব হন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি মন্তব্য করেন, ‘শিক্ষকদের বেতন-সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার থাকলে, ছাত্রদেরও উপযুক্ত শিক্ষার অধিকার রয়েছে। এই আদালত ওই পড়ুয়াদের জন্য চিন্তিত।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ওই স্কুলে কতজন পড়ুয়া রয়েছে? আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, পডুয়ার সংখ্যা ৫৬ জন। তাতে বিচারপতির মন্তব্য, ‘এখন ভাল করে ছাত্রদের পড়াতে বলুন। এখন আমি কোনও বদলির নির্দেশ দেব না। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এই বদলি মামলায় রাজ্যের স্কুলগুলিতে ছাত্র ও শিক্ষকের অনুপাত জানতে চেয়েছেন। আমিও চাইছি।’
এরপর শুক্রবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বেঞ্চ কড়া নির্দেশ দিয়ে জানায়, প্রশাসনিক বদল গাইডলাইন মেনে শিক্ষক বদলি করতে হবে। প্রয়োজনে দূরের স্কুলেও যেতে হবে। শিক্ষকদের মর্জিমাফিক আর কিছু হবে না। দ্রুত এই নির্দেশ কার্যকর করতে শিক্ষা দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। শিক্ষা দপ্তর নির্দেশ দেওয়ার সাতদিনের মধ্যে তা পালন করতে হবে। শিক্ষক যদি না পালন করেন তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে শিক্ষা দপ্তর।