নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রকৃতি আমাদের সবচেয়ে বড় ও কাছের বন্ধু । এই প্রকৃতি থেকে আমরা আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় যাবতীয় জিনিসপত্র পেয়ে থাকি। আমাদের সৌন্দর্য থেকে পেটপুজো, চুলের সমস্যা থেকে নানান রোগ নিরাময়ে প্রকৃতি আমাদের সাহায্য করে গেছে ।
সৌন্দর্য ও রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে আকন্দ ফুলের গাছ অত্যন্ত উপকারী। এই আকন্দ ফুলের গাছকে আমরা জানি শিবের পূজারী হিসেবে। এর বৈজ্ঞানিক নাম ক্যালোট্রপিস গিগ্যানটি। মরু অঞ্চলে আকন্দের আবির্ভাব। আকন্দের সাদা কষে আকুনডরিন, ক্যালোট্রপিন ও এনজাইম নামক রাসায়নিক উপাদান থাকে যা রোগ নিরাময়ে অত্যন্ত উপকারী।
এই উদ্ভিদ কোথায় পাওয়া যায়?
এই গাছ অত্যন্ত পরিচিত গুল্মোজাতীয় এক প্রজাতি। এবং নানান ওষুধি গুনে সমৃদ্ধ। গ্রামাঞ্চলের উঁচু জায়গা ঝোঁপ ঝাঁর রাস্তা রেল লাইনের পাশে পরিত্যক্ত জায়গায় অবহেলা অনাদরে বেড়ে ওঠে। উচ্চতায় সাত-আট ফিট পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ গাছের ছাল ফুল পাতা ও কষ বিভিন্ন কার্যে ব্যবহৃত হয়। ধুসর বর্ণের ছাল যুক্ত আকন্দ গাছের কান্ড বেশ শক্ত হয়। এ গাছের পাতা শাখা প্রশাখা ভাঙলে বা কাটলে সাদা রঙের কষ বের হয়। শে^ত বর্ণের আকন্দের ফুলের রঙ সাদা ও লাল আকন্দের ফুল বেগুনী রঙের হয়ে থাকে।
আকন্দের উপকারীতা:
বায়ু নাশক, চুলের রোগ, ফোলা, পান্ডু রোগ, কুষ্ঠ, পাকস্থলীর ব্যাথা নিরাময়ে ও হজমে বিশেষ ভূমিকা রাখে আকন্দ। ব্যাথা, বেদনা, টাক পরা, ফোলা, দাদ, ক্রিমি, শ্বাস কষ্টে আকন্দ উপশমক হিসেবে কাজ করে। হাপানী, অগ্নিমান্দ্য ও অম্ল রোগের জন্য ও আকন্দ উপকারী। ব্রণ ফাটাতে, বিছের কামড়ের বিষ বার করতে, বুকে স্বর্দি বসে গেলে, শিশুর মাথা অস্বাভাবিকভাবে বড় হলে, কান থেকে পুজ পরা, খোস পচরা, একজিমা, দাঁতের ব্যাথা নিরাময় ও গর্ভপাতে আকন্দ পাতার রস বিশেষ ফল দায়ক।
অযত্ন অবহেলায় বেড়ে উঠলেও আকন্দ চাষযোগ্য। চাষের ক্ষেত্রে মে-জুন মাসে তিন থেকে চার ফুট দূরত্বে আকন্দ গাছ লাগানো ভালো। মোথা ও সাকার অন্যান্য অংশ থেকে আকন্দ গাছ বেশি বংশ বিস্তার করে থাকে। সাধারণত ছোট ও বড় এ দু প্রজাতির আকন্দ পাওয়া যায়। শ্বেত আকন্দ ও রক্ত আকন্দ। বড় আকন্দের দুটি উপ-প্রজাতি। আকন্দের ফুল, পাতা, শিকর ও আঠা বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে বিষাক্ত বলে আকন্দ থেকে তৈরি ভেসজ ওষুধ ব্যবহারের সময় মাত্রা ও পরিমাণের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা ও সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।