নিজস্ব প্রতিবেদন: চাকরি জীবনের প্রতিটি দিন নানারকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় সবাইকে। এসব চ্যালেঞ্জকে সামলে সামনে এগিয়ে যেতে হয়। চাকরিটা উপভোগ করতে হবে। উপভোগ করতে না পারলে সফলতা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। হতাশাজনক আচরণ শুধু আপনার ক্যারিয়ারের জন্যই শুধু নয়, সহকর্মীদের জন্যও ক্ষতিকর। মনমরা হয়ে না থেকে উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করে যেতে হবে।
দিনের বেশিরভাগ সময় মানুষ কর্মক্ষেত্রে কাটায়। কর্মক্ষেত্রকে তাই অনেকে বলেন ‘দ্বিতীয় ঘর’। সেই ‘দ্বিতীয় ঘর’—এ যাদের সঙ্গে থাকছেন, তাদের সঙ্গে সহজ, সাবলীল, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কিন্তু কাজে আনন্দ এনে দেয়। কাজের মানও ভালো হয়। কিভাবে কর্মক্ষেত্রে কেমন আচরণের মাধ্যমে সহকর্মীর সাথে একটি ভালো ও সুস্থ সম্পর্ক গড়বেন – এবং কিভাবে এটা আপনাকে শক্তিশালী করবে জেনে নিন…
পেশাদারী ব্যবহার- পরিবারের সদস্যদের সাথে যে ব্যবহার করেন তা যেন পেশাদারী কাজে না আসে। অফিসের সহকর্মীদের সাথে যতটুকু পেশাদারী ব্যবহার প্রয়োজন তা করুন। মনে রাখবেন খুব ঘনিষ্ঠ সু-সম্পর্ক বা যাচাই-বাছাই ছাড়াই কোন সহকর্মীর সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত সু-সংবাদ ও দুঃসংবাদ ভাগাভাগি করবেন না।
অন্যের মতামতকে প্রাধান্য দিন- অফিসে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সবার মতামত নিন। একতরফা সিদ্ধান্ত না নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। এতে করে সবার মধ্যে দলগতভাবে কাজ করার মানসিকতা তৈরি হবে।
সহযোগিতা করুন- অফিস মানেই ‘দলগত অংশগ্রহণ’—সেখানে সহকর্মীরা একে-অপরকে সাহায্য করে কাজ সম্পন্ন করবেন, এটাই নিয়ম। আপনার অসহযোগিতা শুধু সেই কাজকেই প্রভাবিত করবে না, বরং সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কেও রাখবে নেতিবাচক প্রভাব। মনে রাখবেন, ভালো সহকর্মী হতে চাইলে পারস্পরিক সহযোগিতার বিকল্প নেই। নতুন কর্মীকেও মানিয়ে নিতে সাহায্য করুন।
পরনিন্দা বা পরচর্চা করবেন না- অফিসে পরনিন্দা বা পরচর্চা সম্পূর্ণ পরিহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে অফিস কাজের জায়গা পরনিন্দা করার জায়গা না। সহকর্মীর পেছনে তার বিরুদ্ধে কথা বললে আপনারই কাজের পরিবেশ নষ্ট হতে পারে। তাই এ ধরনের কথা-বার্তা এড়িয়ে চলুন। কোনো সহকর্মীর সাথে ভালো সম্পর্ক বা বন্ধুত্ব হলেও, অন্য সহকর্মীদের সম্পর্কে সমালোচনা না করাই ভালো৷ কারণ এতে সাময়িক আনন্দের চেয়ে আপনার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাই বেশি থাকে৷
নালিশ নয়- সহকর্মীর আচরণে বিরক্ত হলে প্রথমে বিষয়টি তাকে ভদ্রভাবে বলুন। ভদ্রভাবে বলার পরেও সহকর্মীর সংশোধন না হলে তাকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করুন। অফিসে কাজ করতে গিয়ে সহকর্মীর বিরুদ্ধে সরাসরি কর্তৃপক্ষকে নালিশ করলে সেটি আরো বিরোধের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে পরিস্থিতি যদি সামাল দেয়ার মতো না হয় তবে অবশ্যই ব্যবস্থা নিন।
যোগাযোগ- আধুনিক বিশ্বে যোগাযোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে মানুষ যত বেশি একে-অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন সে ততবেশি শিখতে পারবেন। সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ সব সময়ে বজায় রাখুন। তবে বিনা প্রয়োজনে বার বার সহকর্মীকে ফোন দিবেন না। বার বার ফোন দিলে আপনার সহকর্মী বিরক্ত হতে পারেন।
মিলেমিশে কাজ করা- কর্মক্ষেত্রে নারী, পুরুষ, নবীন, প্রবীণ সকলেই সমান৷ তাই ছোট-বড় সকলের একে-অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকলে ছোটখাটো অনেক সমস্যাই এড়িয়ে চলা সম্ভব৷ তাছাড়া কারো উপকার করতে পারলে করুন৷ কিন্তু না পারলেও কখনো অপকার করবেন না৷ কারণ আসল সত্য একসময় অবশ্যই বেরিয়ে আসবে৷ তখন নিজেই ঝামেলায় পড়বেন।