মনামী রায় : ৩ সেপ্টেম্বর ১৯৫৪ অগ্রদূতের পরিচালনায় মুক্তি পায়,’অগ্নিপরীক্ষা’ ছবিটি। উত্তম কুমার এবং সুচিত্রা সেন তখনও সেরকমভাবে সিনেমা জগতে জমি খুঁজে পাননি। আশাপূর্ণা দেবীর এই উপন্যাসটিতে, তাঁরা একসঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন। এর আগেও তাঁদের দুজনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল ”সাড়ে চুয়াত্তর” সিনেমাটিতে। তারপর আবার এই ছবির হাত ধরেই বড় পর্দায় দেখা দেয় এই জুটি।

”অগ্নিপরীক্ষা” ছবিটির আগে পর্যন্ত উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেন কেউই নক্ষত্র হয়ে জ্বলে ওঠেতে পারেননি চলচ্চিত্রের মহাকাশে। তাই সকলেরই ভ্রান্ত ধারণা ছিল সাধারণ ছবির মতন এই ছবিটিও হতে চলছে খুব সাধারণ। কিন্তু এমপি প্রোডাকশনের এই ছবিটিতে একটি মিরাকল ঘটে গিয়েছিল। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে সুচিত্রা সেন লিপ দিয়েছিলেন ” গানে মোর কোন ইন্দ্রধনু” গানটিতে। আর তাতেই বাঙালি পুরুষদের হৃদয় জয় করেছিলেন মিসেস সেন।

আর এই ছবিতেই উত্তম কুমারের সাথে সুচিত্রা সেনের কেমিস্ট্রি বুঝিয়ে দিয়েছিল যে রোমান্টিকতার “Showman Ship” কাকে বলে। উত্তম কুমারের পাশ্চাত্য পোশাকে স্বাচ্ছন্দ এবং বাঙালি বনেদিয়ানার ব্যক্তিত্ব সাথে সুচিত্রা সেনের সাবলীলতা বাঙালির স্টাইল স্টেটমেন্ট পাল্টে দিয়েছিল পুরোপুরি ভাবে। ”অগ্নিপরীক্ষা” সিনেমাটির আগে পর্যন্ত বাঙালি বুঝতো সিনেমা মানেই কিছু ঠাকুর-দেবতা বা পারিবারিক বা দেশাত্মবোধক সিনেমা।

”অগ্নিপরীক্ষার” পর বাঙালি প্রথমবার সিনেমাতে রোমান্টিকতার স্বাদ পায়। বাঙালির প্রেমে লাগে পাশ্চাত্যের ছোঁয়া। ১৯৬৭ সালে ”অগ্নিপরীক্ষা” সিনেমাটিই আলাদাভাবে হিন্দিতে রিমেক হয়। ছবিটির নাম ”ছোটিসি মুলাকাত”। এই ছবিটিই উত্তম কুমারের প্রথম হিন্দি সিনেমা।