নিজস্ব সংবাদদাতা: বিরাট কোহলি এক সময়ের ভারতীয় ক্রিকেটর দলনেতা ছিলেন। তাঁর হাত ধরেই ভারত আন্তজার্তিক ক্রিকেটে বহু ট্রফি জয়ের স্বাদ পেয়েছে। সদ্য় সব ফর্ম্য়াটের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট থেকে দলের অধিনায়কের আর্মব্য়ান্ড সরিয়ে রেখেছেন মিঃ কোহলি। কিন্তু বেশিদিন না যেতে যেতেই বিরাটের সেই পথ অনুসরণ করল আর এক বিরাট। তবে সে দলনেতা ছিল না। ছিল দেশের প্রথম নাগরিক রাষ্ট্রপতির অত্য়ন্ত বিশ্বস্ত এক ঘোড়া।
বুধবার ছিল দেশের ৭৩তম সাধারণতন্ত্র দিবস। দিল্লির রাজপথে সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজে এবার থেকে আর বিরাটকে চোখে পড়বে না কারোর। কেননা ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ সালে রাইসিনা হিলস থেকে নিজের চাকরি জীবনে অবসর নিল বিরাট। মিঃ কোহলি যেমন ২২ গজে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন, ঠিক তেমনই রাইসিনা হিলসের সবুজ গালিচায় জড়িয়ে রয়েছে ঘোড়া বিরাটের পদচিহ্ন।

বিরাটের অবসরের শেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে রাজপথের কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানেও হাজির করা হয় তাকে। তারপর অনু্ষ্ঠান শেষে বিরাটের অবসরের কথা ঘোষণা করা হয়। নিজের অবসরের দিনে বিরাট ছিল শুধুই নীরব দর্শক। বিগত বছরগুলিতে সাধারণতন্ত্র দিবসে তার ভূমিকা থাকলেও, চলতি বছর কেবলমাত্র দর্শক হিসেবে সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে দিল্লির রাজপথে উপস্থিত হয়েছিল সে।
মিঃ কোহলির মত হয়ত তাঁকে দেশের সাধারণ মানুষ অতটা চিনতেন না। চিনবেনই বা কেন। এই বিরাট তো মাঠের বিরাট ছিলেন না, ছিলেন রাইসিনা হিলসে থাকা রাষ্ট্রপতি ও তাঁর সেনাবাহিনীর অত্য়ন্ত বিশ্বস্ত এবং প্রিয় এক ঘোড়া। এই বিরাট কোনও রেকর্ড গড়ে গিনেস বুকে নাম তোলেনি। নীরবে-নিভৃতে রাইসিনা হিলসে কর্মরত সেনাদের সঙ্গে কাটিয়েছেন বেশ কয়েক বছর। তাই তাকে নিয়ে সোশ্য়াল মিডিয়ায় তোলপাড় হয় না। নেটিজেনরা কোনও মন্তব্য় করেন না।

সেনাবাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী একটা বয়সের পর যেমন সবাইকে অবসর নিতে হয়, বিরাটও সেই নিয়মের ব্য়তিক্রম ছিল না। নীরব দৃষ্টিতে নিজের চোখে চেয়ে দেখলেন তাঁর অবসর জীবনের নানা ঘটনা। বিরাটের ছোঁয়া আজ থেকে আর পাবে না রাইসিনা হিলস। প্রতিদিন ভোরে অন্য় ঘোড়ারা রাইসিনা হিলসে নিজেদের মনের আনন্দে ঘুরে বেড়ালেও, দেখা যাবে না বিরাটকে। আজ থেকে বিরাটের ঠিকানা হয়ত হতে চলেছে কোনও নিভৃতবাস। যেখানে জীবনের বাকি দিনগুলি কাটাবে রাইসিনা হিলসের বিরাট।
নিজের কর্মজীবনের অবসর গ্রহণের অনুষ্ঠান শেষে মনে মনে রাইসিনা হিলসকে আলবিদা জানিয়ে ধীরে ধীরে চোখের পলকে হারিয়ে গেল বিরাট। শেষ হল আরও এক বিরাটের কর্মজীবন।