নিজস্ব সংবাদদাতাঃ উৎসবের মরশুমেই ভারতের বিভিন্ন জায়গাতে বারবার হামলার নিশানা করেছে জঙ্গিরা। চলতি বছরও তার ব্যতিক্রম ছিল না। তবে রাজধানীর পুলিশের তৎপরতায় হামলা ঘটানোর আগেই তাদের জালে ধরা পড়ে যায় এক পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি। প্রাথমিক তদন্তের পরই জানা গিয়েছে , দিল্লি পুলিশের জালে ধৃত মহম্মদ আসরাফ আসলে এক পাক নাগরিক। তদন্ত যত গভীরে যাচ্ছে ততই পুলিশের সামনে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে যে বাড়িতে আসরাফ ভাড়া থাকত, সেই বাড়ির মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে , তাদের সাহায্যেই নকল পরিচয়ে আধার কার্ড বানিয়েছিল ফেলেছিল সে। প্রসঙ্গত, দিল্লি পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়েছিল, পূর্ব দিল্লির লক্ষ্মী নগরে দুই জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে। সেই মত গত মঙ্গলবার গোটা এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। লক্ষ্মী নগর ও সংলগ্ন রমেশ পার্ক থেকে সন্দেহভাজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দুই ব্যক্তি হল মহম্মদ আসরাফ ও উমারউদ্দিন। পরে পুলিশের জেরায় ভেঙে পড়ে আসরাফ জানায়, তার আসল বাড়ি পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের নারওয়ালে। জেরায় সে আরও জানা যায়, বিগত ১০ বছর ধরেই ভারতে একাধিক নকল পরিচয়ে বসবাস করছিল। পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। ভারতে স্লিপার সেল হিসাবে কাজ করার জন্যই আশ্রয় নেওয়া তার । উৎসবের মরশুমে তাকে জনবহুল এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বলেও স্বীকার করেছে ওই পাক জঙ্গি।

ইতিমধ্যে ধৃত আসরাফের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ একটি একে-৪৭ অ্যাসাল্ট রাইফেল, একটি হ্যান্ড গ্রেনেড, দুটি ম্যাগাজিন, ৬০ রাউন্ড গুলি, চিনের তৈরির দুটি পিস্তল, ৫০ রাউন্ড গুলি এবং একটি ভারতীয় পাসপোর্ট ও অন্যান্য পরিচয়পত্র উদ্ধার করে। আগে আসরাফ যে বাড়িতে ভাড়া থাকত, সেই বাড়ির মালিকের ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, তাঁর বাবাই আসরাফকে আধার কার্ড তৈরি করে দিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, আসরাফ এখানে ৬ মাস ছিল। আমার বাবা পরিচয় পত্র চাওয়ায় সে আধারকার্ড নেই বলে জানায়। পরে আমার বাবা ওর কাছ থেকে বাকি কাগজপত্র নিয়ে আধার কার্ড তৈরি করে দেয়। ও বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকে ওর সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ নেই।
এই প্রসঙ্গে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের ডেপুটি কমিশনার প্রমোদ সিং কুশওয়াহা জানান, আসরাফ পাকিস্তান থেকে প্রথমে বাংলাদেশ যায় এবং সেখান থেকেই সীমান্ত পার করে ভারতে আসে। বিগত প্রায় ১০ বছর ধরে আলি আহমেদ নুরি পরিচয় দিয়ে সে ভারতে বসবাস করছিল। এবং তারপরই তাকে গ্রেফতার করা হয়। এখন তার কাছ থেকে অনেক অজানা তথ্য জানা যাবে বলে মনে করছেন দিল্লি পুলিশের ক্রাইম বেঞ্চের গোয়েন্দারা।