শ্রাবণী পাল: দরজায় কড়া নারছে ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। গোয়ায় প্রার্থী তালিকা ঠিক করতে পৌঁছে গেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন নিয়েও ছিল জল্পনা। আজ তাও পরিষ্কার। উত্তরপ্রদেশে প্রার্থী দেবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে নয়া পন্থা নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস। মূলত, যে রাজ্যে যে দল বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসেবে সবচেয়ে শক্তিশালী, তাকে সেখানে লড়তে দিচ্ছে তৃণমূল। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিধানসভাগুলোতে ‘পরিচিতি’ বাড়াতেই কী এহেন রাজনীতি তৃণমূলের? মঙ্গলবার কালীঘাটের বাড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা কিরণময় নন্দ। গতবছর উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখমন্ত্রী কমলাপতি ত্রিপাঠীর দুই নাতি ললিতপতি ত্রিপাঠী ও রাজেশপতি ত্রিপাঠী শিলিগুড়িতে এসে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস যোগ দেন। মনে করা হচ্ছিল, তৃণমূলের হয়ে উত্তরপ্রদেশে দাঁড়াতে পারেন তাঁরা। উত্তরপ্রদেশে যোগীর বিরুদ্ধে মমতা লড়বেন কি না তা নিয়ে তৈরি হওয়া জল্পনা উড়ালেন তিনি। কিরণময় জানিয়ে দিলেন, ”উত্তরপ্রদেশে প্রার্থী দিচ্ছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপিকে কোণঠাঁসা করেছিল ভাঙা পা নিয়ে প্রচার করা জননেত্রী। যেখানে একাধারে তৃণমূল ত্যাগ করছিলেন নেতারা, সেখানে দলকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রীর সিংহাসনে বসেছেন মমতা। এরপর লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশজুড়ে বিজেপি বিরোধী মুখ হিসেবে তাঁকেই প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে তৃণমূল। তবে যোগীর বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন না মমতা। উত্তরপ্রদেশে বিজেপির শক্তি প্রতিষ্ঠা করার আগে অখিলেশের সরকারই ছিল। ফলে শক্তিক্ষয় এখনও পুরোপুরি হয়নি সমাজবাদী পার্টির। তাই ‘গোবলয়’-এর প্রধান বিরোধী শক্তি SP কেই লড়তে দিচ্ছেন মমতা। শুধু পাশে দাঁড়াচ্ছেন অখিলেশ যাদবের। যে রাজ্যে যে রাজনৈতিক শক্তি বিজেপির বিরুদ্ধে শক্তিশালী তাকে সেখানে লড়তে দেওয়ার নীতিতেই অনড় রয়েছেন মমতা। ৮ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশে যাওয়ার দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ধার্য করেছেন। অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনও করবেন বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর আরও একবার উত্তরপ্রদেশে যাবেন বলে জানিয়েছেন মমতা। অর্থাৎ দু’দফায় যোগী সরকারকে পরাস্ত করতে ইউপি যাবেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
অন্যদিকে, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়া শক্তিশালী রাজনৈতিক দলগুলির পাশে দাঁড়ানোকে মোটেই ভালো চোখে দেখছে না কংগ্রেস। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে বিজেপি বিরোধী যে শক্তিশালী জোটগুলির পাশে দাঁড়িয়ে তাদের দুর্বল করছে তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ একটি দল সমর্থনে বা জোট হিসেবে গেলে বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে। যে সম্ভাবনা বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে আব্বাস সিদ্দিকীর ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফন্টের জোট করার পর দেখা গিয়েছিল। বিজেপি বিরোধী ভোট ঘুরে তৃণমূলের খাতাতেই এসে পড়েছিল। ফলে বাইরের রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ‘পাশে দাঁড়ানোর রাজনীতি‘ কতটা কার্যকরী হবে তার দিকে অবশ্যই নজর থাকবে।