নিজস্ব সংবাদদাতা:মহিষাসুরমর্দিনীর আগমনে আনন্দময় হয়ে উঠেছিল ধরণী। মানুষ মেতেছিল আনন্দ উৎসবে। চিন্ময়ীর বিদায়ের বার্তা ভুলে মানুষ আবার মেতে উঠছে লক্ষ্মী পুজোয়। প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরেই দেবী লক্ষ্মী পূজা হয়ে থাকেন। কোজাগরী লক্ষ্মী পূজায় ঘরে ঘরে নানা ধরনের ভোগ মায়ের কাছে নিবেদন করা হয়। এবার পুজোয় মায়ের কাছে খিচুড়ি ভোগ এর সাথে নিবেদন করতে পারেন পায়েস। বিভিন্ন ধরনের পায়েস এর প্রণালী রইল আপনাদের জন্য-
১.চিঁড়ের পায়েস-বাঙালি সাধারনত চিঁড়ের মোয়া কিংবা মিষ্টি দই দিয়ে চিঁড়ের এই দুই ভাবেই ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে চিঁড়ের পায়েসও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
উপকরণ-চিড়া- ১ কাপ,চিনি- ৩ টেবিল কাপ,এলাচ- ৩টি,দারচিনি- ছোট ২ টুকরো,দুধ- ৫০০ গ্রাম,খোয়া ক্ষীর- ৩ টেবিল চামচ,কিসমিস- ৭/৮টি,লবণ- ১চিমটি,কাজু বাদাম- ৩/৪টি, কুচি করা,পেস্তা বাদাম- ৩/৪টি, কুচি করা
ঘি- ২টেবিল চামচ।

প্রনালী-একটি পাত্রে প্রথমে দুধ দিতে হবে। দুধ জ্বাল দিতে হবে এমনভাবে যেন পাত্রের নিচে না লেগে যায়। এভাবে জ্বাল দিতে দিতে দুধ ঘন করতে হবে।এবার অপর একটি পাত্র গরম দিতে হবে। গরম হয়ে গেলে তাতে ১ টেবিল চামচ ঘি দিতে হবে ও অর্ধেক কাজু বাদাম ও পেস্তা বাদাম হালকা ভেজে নিতে হবে। কাজু ও পেস্তা বাদাম ভাজা হয়ে গেলে এবার কিসমিস ভেজে নিতে হবে, তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে বাদাম পুড়ে না যায়। বাদাম ও কিসমিস ভাজা হয়ে গেলে তা একটি পাত্রে উঠিয়ে রাখুন।এবার বাকি ১ টেবিল চামচ ঘি দিয়ে চিঁড়ে ভেজে নিতে হবে।তারপর ফুটন্ত জ্বাল দেয়া দুধে প্রথমে বাদাম ও কিসমিস এবং পরে ভাজা চিঁড়ে ঢেলে নাড়তে হবে। সাথে চিনি, খোয়া ক্ষীর ও লবণ দিয়ে আবার নাড়তে হবে। প্রায় ৫ মিনিট সময় ধরে নাড়তে হবে। তাহলেই তৈরি চিঁড়ের পায়েস।
২. ফলের পায়েস-লক্ষ্মী পূজার ভোগের সব রকম ফল দিয়ে তৈরি করা যায় পায়েস। একটু অন্যধরনের ছোঁয়াও পাওয়া যাবে আবার ঐতিহ্য মেনে পায়েল নিবেদন করা হবে।
উপকরণ-দুধ ৫০০ মিলি,আধভাঙা গোবিন্দভোগ চাল ১/২ কাপ বিভিন্ন ধরনের ফল কুচি ১ বাটি করে (আপনি যে কোন ফল নিতে পারেন),বেদানা ১ কাপ,এলাচ গুঁড়ো ১ চা চামচ চিনি স্বাদমতো।

প্রণালী-প্রথমে আধভাঙা গোবিন্দভোগ চাল ধুয়ে নিতে হবে৷ তারপর বড় পাত্রে দুধ গরম করতে বসাতে হবে৷দুধ গরম হলে ওর মধ্যে আধভাঙা চাল টা দিয়ে দিতে হবে৷এবার চালটা সেদ্ধ হয়ে দুধ ঘন হয়ে আসলে ওর মধ্যে চিনি আর এলাচ গুঁড়ো দিয়ে দিতে হবে৷পায়েস গরম অবস্থায় ওর মধ্যে সমস্ত ফলগুলো দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিতে হবে৷তাহলেই তৈরি ফলের পায়েস৷
৩.ছানার পায়েস-খুব সহজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন এই দুর্দান্ত পায়েসটি। অনেকেই বাড়িতে এমনি বানান এই পায়েস কিন্তু এবার লক্ষ্মী পূজার ভোগের বানিয়ে ফেলুন ছানার পায়েস
উপকরণ- দুধ ১ লিটার,পোলাও চালের মোটা গুড়ো ,২ টেবিল চামচ,এলাচ ২ টা,ছানা ২ কাপ,কনডেন্স মিল্ক হাফ কাপ,চিনি পরিমান মতো,কিসমিস-কাজু বাদাম ইচ্ছামত।

প্রণালী- দুধে এলাচ দিয়ে ফুটতে দিন,ফুটে উঠলে চালের গুড়ো দিয়ে সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। ঘন হলে এতে ছানা ও কনডেন্স মিল্ক দিয়ে নামাতে হবে। চিনি যদি লাগে পরিমান মতো দিতে হবে l চিনি দিলে চানা দেবার আগে দিবেন ও একটু ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে l ঠান্ডা হলে পরিবেশনের সময় কিসমিস-কাজু বাদাম দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন l
৪.খেজুর গুড়ের পায়েস-গুড়ের পায়েস মোটামুটি সবারই ভালো লাগে। চিনির পায়েসের থেকে গুড়ের পায়েস একটা অন্যরকম স্বাদ পাওয়া যায়।
উপকরণ-খেজুরের গুড় ৫০০ গ্রাম, আতপ চাল ২৫০ গ্রাম, চিনি ৬ চা চামচ দুধ ২ লিটার, নারকেল কোরানো ১ কাপ,তেজপাতা ২টো, দারুচিনি ২ টুকরো, কিশমিশ ১০-১৫টা

প্রণালী-গুড় ভেঙ্গে ছোট ছোট টুকরো করে ম্যাশ্ড করে নিন। অথবা একটি পাত্রে ১ কাপ জল গরম করুন।এতে গুড়ের টুকরোগুলো দিয়ে দিন এবং নাড়তে থাকুন। গুড় গলে গেলে নামিয়ে ফেলুন। গুড় ঠান্ডা হয়ে এলে ছেঁকে নিন।চাল ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন।একটি পাত্রে দুধ নিয়ে বসান। দুধ ফুটে অর্ধেক হয়ে ঘন হয়ে গেলে এতে তেজপাতা, দারুচিনি ও চাল, চিনি দিয়ে দিন।চাল ফুটে গেলে ঘন ঘন নাড়তে থাকুন। পায়েস ঘন হয়ে এলে আচঁ কমিয়ে এতে ধীরে ধীরে গুড় ঢেলে দিন এবং নাড়তে থাকুন।এরপর এতে নারকেল ও কিশমিশ দিয়ে নেড়ে ঢেকে রাখুন।এরপর দু মিনিট পর নামিয়ে ফেলুন।