নিজস্ব প্রতিবেদন: মানসিক যন্ত্রণা ও শরীরের ব্যথা বেদনা কষ্ট কমাতে সাহায্য করে। তবে এ শুধু কথার কথা না বৈজ্ঞানিকভাবে তা প্রমাণিত। তার আগে জেনে নিই শারীরিক ব্যথা পেলে আমাদের মন আর মাথা কেমন প্রতিক্রিয়া দিয়ে থাকে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে যারা ধ্যানের অভ্যাস করেনি তারা যখন শরীরে ব্যথা পায়, এই ব্যথা তাদের কিছুক্ষণের মধ্যেই কাবু করে ফেলে। কারণ ব্যথা পাওয়ার সাথে সাথে মস্তিষ্কে ব্যথার অনুভূতি তীব্র হয়ে ওঠে। তাই ব্যথা অনুভূত হওয়ার আগে থেকেই কষ্ট পেতে শুরু করে। ব্যথার কারণ দূর হলে পরে ধীরে ধীরে ব্যথার প্রকোপ কমতে থাকেনা।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে যারা ধ্যান অভ্যাস করে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে ব্যথার বোধ আগে থেকে অত প্রকট হয় না। কিন্তু শেষমেশ যখন ব্যথাটা এসে পৌঁছয় তার অনুভূতি তাদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি তীব্র হয়। তবে ক্ষণিকের সেই যন্ত্রনার শেষে,ব্যথার অনুভূতি মিলিয়ে যাওয়াটা আবার তাদের ক্ষেত্রে অনেক দ্রুত হয়।
এবার বৈজ্ঞানিক প্রমাণের দিকে আসছি ১৯৬৩ সালের ভিয়েতনামের একটি ঘটনা। এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী সেখানকার তৎকালীন শাসকের বিরোধিতা করে প্রকাশ্য দিবালোকে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন। সেই সন্ন্যাসীর সারা গায়ে দাউ দাউ করে আগুন জ্বললেও তিনি ছিলেন স্থির,শান্ত, অবিচল। যন্ত্রণায় চিৎকার করা তো দূরে থাক সমস্ত সময় তিনি মুখ থেকে একটা টু শব্দও করেন নি।


তবে কি যারা ধ্যান করেন তাদের কি কষ্ট হয় না? তারা কি একটুও বিচলিত হন না? তাদের কি দুশ্চিন্তা হয় না? উত্তরটি হল তাদেরও হয়। কিন্তু তারা বাহ্যিক দুঃখ কষ্ট শোক ব্যথার মোকাবিলা কি করে করা যায় তা জানেন। শুধুমাত্র নিজের ভালোটাই বিচার করেন না। নিজের চিন্তায় মগ্ন না থেকে আশেপাশের মানুষগুলো ভালো আছেন কিনা সেদিকে তারা খেয়াল রাখেন। তাদের দিকেও অনেক প্রলোভন এগিয়ে আসে। কিন্তু তাদের মানসিক শক্তি এতটাই দৃঢ় যে তা সহজে ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। আর দৃঢ় মানুষের শক্তির জোড়েই সহজে পেরিয়ে যেতে পারেন নানা জাগতিক শারীরিক অথবা মানসিক বাধা বিপত্তি।


দলাই নামার মতে নিছক ধর্মীয় আচরণ নয়, ধ্যান আসলে মানসিক শক্তি বৃদ্ধির এক অনন্য উপায় আধুনিক বিজ্ঞানের নানা উপকরণের সাহায্যে আমরা মানুষের দুশ্চিন্তা, ব্যথা, বেদনা কমানোর উপায় খুঁজছি। কিন্তু শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিক ওই উপকরণগুলির সাহায্য নিয়ে একজন মানুষের মধ্যে কি ঠিক আছে আর কি ঠিক নেই তার সম্পূর্ণরূপে নির্ধারণ করা যায় না। আজও বিজ্ঞান অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে অসমর্থ।