নিজস্ব প্রতিবেদন: সবুজ ঝড় থামার কোনও লক্ষ্মণই নেই বঙ্গে। বুধবারের ঝড়ে তছনছ হয়ে গেল বিরোধী শিবির। নিশ্চিহ্ন বিজেপি, কংগ্রেস। বামেদের খাতায় ১। ১০৮টির মধ্যে ১০২ টি তৃণমূলের দখলে। ‘উৎসবের মেজাজে ভোট হয়েছে’, জানিয়ে দিয়েছেন নেত্রী নিজেই। নির্বাচনে ‘ছাপ্পা’, ‘সন্ত্রাস’-এর অভিযোগ এলেও বলে না ‘যার শেষ ভালো তার সব ভালো।” এক্ষেত্রে ঘটনাটা হয়েছে ঠিক তাই। অভিযোগের বাঁধন পেরিয়ে সবুজ রঙের কার্পেট দেখা গেল বাংলার রাস্তায়।
গণনার শুরু থেকে বামেরা কিছু জায়গায় এগিয়ে ছিল। তবে বেলা বাড়তে বাড়তেই ফলাফল এগোয় ঘাসফুল শিবিরের পক্ষে। ১০৮টি পুরসভার গণনা শেষে দেখা যায়, ২ হাজার ১৭১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১ হাজার ৮৬৬টিতেই জয়ী তৃণমূল কংগ্রেস। ১১৯টিতে জয়ী নির্দল। ৬৩টিতে বিজেপি। ৫৭টিতে বামফ্রন্ট। ৫৯টিতে জয়ী কংগ্রেস। এককথায় বিরোধীদের ধুয়ে মুছে সাফ করে দেওয়া হয়েছে বলা যেতেই পারে। যদিও এবার আর শূন্য পায়নি বাম। তাহিরপুর পুরসভায় লালের ছোঁয়া লেগেছে। বিজেপি, কংগ্রেস বুথে জিতলেও হাতে আসেনি একটিও পুরসভা। বিরোধীদের উদ্দেশ্যে ‘পাশে আছি’ বলে মন্তব্য করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ। অনুব্রত মণ্ডলের গড়ে ৯৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯২টিতেই জিতেছে তৃণমূল। রামপুরহাট পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছেন সিপিএম প্রার্থী সঞ্জীব মল্লিক। অনুব্রত মণ্ডলের স্পষ্ট বক্তব্য, ”এই ফল প্রত্যাশিত ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিথ্যা কথা বলেন না। মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছে।” ৪০ বছর পর অধিকারী শূন্য হয়েছে কাঁথি। ‘রাজ্যের মানুষ বিজেপিকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করেছে’, হারের পর মন্তব্য উত্তরপাড়ার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থীর। এদিকে জয়প্রকাশ মজুমদার কটাক্ষ করে বলেছেন, ”১০২ গোলে বিজেপি হেরে গেছে তৃণমূলের কাছে।”
কোচবিহারের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের ভিআইপি প্রার্থীর রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কাঁথির ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী অখিল গিরির পুত্র সুপ্রকাশ গিরি। কাঁচড়াপাড়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু তৃণমূলের টিকিটে জয়ী। খড়গপুর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছেন বিজেপির হিরণ চট্টোপাধ্যায়। ত্রিশঙ্কু ফল হয়েছে ৪টি পুরসভায়। এগরা, বেলডাঙা, চাঁপদানি, ঝালদায় জয় পায়নি কেউই। তাহেরপুর পুরসভা গেছে বামেদের দখলে। সুকান্ত, দিলীপ, অর্জুনের গড়েও ভরাডুবি বিজেপির। ২ হাজারের বেশি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ৬৫টিতে জয় পেয়েছে গেরুয়া শিবির। কোচবিহারে আবার ঘটেছে আর এক ঘটনা। নির্দল প্রার্থী ছেলের কাছে পরাজিত হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী মা। ফল প্রকাশের পর দু-একটি জায়গায় তৃণমূল-বিজেপির হাতাহাতির খবর মিলেছে। যদিও ফের বিপুল ভোটে পুরবোর্ড গঠন করল তৃণমূলই।