নিজস্ব প্রতিবেদন: সাঁওতালদের ভাষায়, নিম সাকাম। উত্তরবঙ্গের মেস জনজাতির মানুষেরা বলেন নিম বিলাই। এগুলি আর কিছুই না নিমের বিভিন্ন নাম। তবে যে নামেই ডাকা হোক না কেন, নিমের গুন অসীম। আপনি কি জানেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভীষণ নিমপাতা খেতে পছন্দ করতেন।


হ্যাঁ, সেই তিক্ত নিমপাতা। অনেকের কাছেই এই নিমপাতার রস খাওয়া এক শাস্তিস্বরূপ। আবার অনেকে পরম সুখের সহিত খেয়ে থাকে। তবে এই নিমপাতা স্বাদে তিতো হলেও গুনে কিন্তু একদম তিতো নয়। আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞদের দাবি শুধুমাত্র নিম দিয়ে অন্ততপক্ষে ৫০ টি অসুখ সারানো যায়। ২০১১ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ জার্নাল অফ ফার্মাসিতে নিমের উপর একটি গবেষণা প্রকাশ করা হয়। নিমের মধ্যে প্রায় ১৪০ ধরনের সক্রিয় উপাদান রয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস করে নিম পাতার রস খেতেন। মহামারীর সময়ে, তিনি শান্তিনিকেতনের ছাত্রদের জন্য নিমপাতার রস খাওয়ার প্রচলন শুরু করেছিলেন। কবি বিশ্বাস করতেন পঞ্চতিক্ত পাচন শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। এই পঞ্চতিক্ত পাচন এর মধ্যে ব্যবহার করা হতো নিম, থানকুনি, তেউরি, গুলঞ্চ আর নিশিন্দা পাতা। সবকিছু একসঙ্গে বেটে তৈরি করা হতো এই পাচন। ছাত্রদের জন্য রোজ সকালে খাওয়া ছিল একপ্রকার বাধ্যতামূলক। আজও বাঙালির ঘরে ঘরে, নিমকে খাবারে ব্যবহার করা হয় নানান উপায়ে। সে নিম বেগুন ভাজাই হোক বা নিম পাতার বড়াই হোক।


নিমের গুনাগুন বিচার করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিমকে ‘২১ শতকের বৃক্ষ’ বলে ঘোষণা করেছে। এমনকি প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে আদিকাল থেকেই নিমকে নানান রোগ ব্যাধি নিবারণের জন্য ব্যবহার করা হতো। বাঙালিরা যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ভালোবাসে। তার গল্প, কবিতা, গান পাঠ করতে শুনতে, গাইতে ভালবাসে তেমনই তার পছন্দের নিম পাতাকেও দৈনন্দিন জীবনের অংশ করে নিন। নিম কোনো না কোনোভাবে শরীরের উপকার করে। এমনকি রুখে দিতে পারে মরণ রোগ ক্যান্সার কেউ।