নিজস্ব প্রতিবেদন: ধারাবাহিকতাই যে সবচেয়ে বড় সমস্যা, তা স্বীকার করে নিয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের একাধিক খেলোয়াড়। কোচ নিজেও তা সরাসরি স্বীকার না করলেও পরোক্ষ ভাবে তা মেনেই নিয়েছেন। আক্রমণে একা ক্লেটন সিলভাই দাপুটে পারফরম্যান্স দেখিয়ে চলেছেন। মাঝে তরুণ উইঙ্গার নাওরেম মহেশ সিং তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছিলেন। কিন্তু তিনিও তিন-চারটি ম্যাচে ভাল খেলার পরে ফর্ম হারিয়েছেন। কোচও তাঁর ওপর বেশ অসন্তুষ্ট। ক্লেটনের দরকার সতীর্থদের সাহায্য, কিন্তু তাঁরাও ধারাবাহিকতার অভাবে ভাল রকম ভুগছেন। আক্রমণে ভিপি সুহের, মাঝমাঠে অস্ট্রেলীয় জর্ডন ও’ডোহার্টি, চ্যারিস কিরিয়াকু এবং ব্রাজিলীয় অ্যালেক্স লিমারও একই সমস্যা। এক ম্যাচে ভাল খেললে পরের ম্যাচে বা পরের দুই ম্যাচেও যে তাঁদের ওপর ভরসা করা যাবে, এমন নিশ্চয়তা নেই। শুরুর দিকে ভাল খেললেও ক্রমশ দলটা হতোদ্যম হয়ে পড়ছে।
এছাড়া চোট-আঘাতের সমস্যা তো রয়েছেই। বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ম্যাচে জর্ডন প্রথম এগারোয় থাকলেও পরে তাঁর জায়গায় কিরিয়াকু নামেন। কিন্তু প্রথম ১৫ মিনিট ভাল খেলার পরে গোটা দলটাকে প্রায় তেলহীন ইঞ্জিনের মতো দেখাচ্ছিল। রক্ষণে ইভান গঞ্জালেস ও লালচুঙনুঙ্গা একসঙ্গে ভাল খেললে তাঁরা দুর্ভেদ্য হয়ে উঠতে পারেন। কিন্তু দু’জনেরই পারফরম্যান্সের রেখচিত্র বারবার ওঠানামা করছে। গত ম্যাচে লিগ টেবলে তাদের নীচে থাকা জামশেদপুরের বিরুদ্ধে শুরুর দিকে ভাল খেললেও কলকাতার দল দ্বিতীয়ার্ধে রীতিমতো ধুঁকতে শুরু করে। তাদের রক্ষণের বিশাল ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়ে জয় ছিনিয়ে নেয় জামশেদপুর, প্রথম লিগে যাদের ৩-১-এ হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল।
সেই ম্যাচের ১২ মিনিটের মাথায় ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড ক্লেটন সিলভার গোলে এগিয়ে যায় লাল-হলুদ বাহিনী। কিন্তু তাঁর নবম গোলের সুফল পাননি ট্র্যাজিক হিরো। দ্বিতীয়ার্ধে অস্ট্রেলীয় ফরোয়ার্ড হ্যারি সয়্যার ও বঙ্গ ফরোয়ার্ড ঋত্বিক দাসের গোলে লিগের দ্বিতীয় জয় ছিনিয়ে নেয় জামশেদপুর এফসি, যারা তার আগের দশটি ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেনি। এগিয়ে থেকেও এই নিয়ে নবম পয়েন্ট খোয়ায় ইস্টবেঙ্গল এফসি। প্রথম ছয়ের দৌড়ে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে হলে কলকাতার দলকে এই ম্যাচ জিততেই হত। কারণ, পরের দু’টি ম্যাচে কঠিন প্রতিদ্বন্দী। এই ম্যাচ জিতে রাখতে পারলে ওই দুই ম্যাচে আত্মবিশ্বাসের স্তর কিছুটা হলেও ভাল জায়গায় থাকত এবং সেই আত্মবিশ্বাসই হয়তো তাদের তথাকথিত বড় দলের বিরুদ্ধে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছোঁড়ার শক্তি জোগাত। কিন্তু কোনও ম্যাচেই জিততে পারেনি তারা। এই পরিস্থিতিতে প্রায় অপ্রতিরোধ্য হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ানো ইস্টবেঙ্গল এফসি-র কাছে কঠিনতম চ্যালেঞ্জ।