নিজস্ব সংবাদদাতা : করোনার জেরে ২০২০-র মার্চ থেকে প্রায় ২ বছর রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। মাঝে দু’বার নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হয়। সেইসময় অর্থাত্ দ্বিতীয় দফায় স্কুলে নবম থেকে দ্বাদশের ক্লাস হয়েছে ১৬ নভেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি। করোনার প্রকোপে ফের তা বন্ধ হয়ে যায়। গত দু’বছরে প্রাক-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত একদিনও ক্লাস হয়নি।
চলতি বছর জানুয়ারিতে বাংলায় সংক্রমণের লাগামছাড়া বৃদ্ধির জেরে রাজ্য সরকার বিধিনিষেধ জারি করার সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করে। আপাতত করোনার দাপট অনেকটাই কমেছে। বেশ কিছুদিন থেকেই নানামহল থেকে স্কুল খোলার দাবি উঠছিল। এবার এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করল রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির স্কুল খোলার ব্যাপারে শিক্ষা দফতর রাজ্যের সংশ্লিষ্ট অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। সূত্রের খবর, আগের মতো ধাপে ধাপে স্কুল খোলার পক্ষেই প্রস্তাব পেশ করেছে শিক্ষা দফতর। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওমিক্রন ততটা মারাত্মক নয় বলেই স্কুল খোলার কথা ভাবছে সরকার।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার স্কুল খোলা নিয়ে মুখ্যসচিবকে প্রস্তাব দেয় রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, শিক্ষা দফতরের এই প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন মুখ্যসচিব। পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের বিষয় নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে মতামত নেওয়া হবে। জানা গিয়েছে, স্কুল শিক্ষা দফতর ২৩ জানুয়ারি থেকে ওয়েবিনার সিরিজ করবে। সিরিজের নাম ‘উজ্জীবন চর্চা’। শিক্ষাবিদদের পাশাপাশি আলোচনা হবে মনোবিদদের সঙ্গেও। আলোচনার রিপোর্ট জমা পড়বে সংলিষ্ট দফতরে। তারপর এই বিষয়টিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিশেষজ্ঞ কমিটি। বিশেষজ্ঞদের নিদান কার্যকর করবে রাজ্য সরকার। সোমবার থেকে মহারাষ্ট্রে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্তারাও স্কুল খোলার পক্ষে সওয়াল করেছেন। হাই কোর্টেও স্কুল খোলা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমেও স্কুল খোলার দাবি উঠতে শুরু করেছে। স্কুলে পঠন-পাঠন চালু না হওয়ার প্রতিবাদে শিক্ষকদের বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে বিভিন্ন জেলায়।
স্কুল খোলা নিয়ে মাঠে নেমেছে বিরোধীরাও। বার, পার্লার, সেলুন-সহ বিনোদনের সব জায়গা খোলার অনুমতি মিললেও স্কুল বন্ধ কেন? প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরাও।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের শাসকদলের বক্তব্য, সরকার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্কুল কলেজ খোলার পক্ষে। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কোনওরকম ঝুঁকি নেওয়ার পথে রাজ্য সরকার যেতে চায় না। সেই কারণেই বাস্তব পরিস্থিতি দেখে নেওয়া হচ্ছে। তবে সূত্রের খবর, বাংলায় স্কুলের দরজা খুলতে পারে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে স্কুল খোলার সম্ভাবনা রয়েছে।