নিজস্ব সংবাদদাতা : “দেশের বৃদ্ধির জন্য কঠিন সময়। নির্বাচন যাবে আসবে। কিন্তু বাজেট সারা বছরের আর্থিক ব্লু প্রিন্ট তৈরি করবে। এই বছরটা ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির জন্য কঠিন এবং গুরুত্বপূর্ণ। ” বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনেই সংসদে প্রবেশ করে এই বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সমস্ত নির্বাচিত সাংসদদের কাছে আবেদন করেছিলেন যেন তাঁরা যথাযথভাবে বিতর্কসভায় অংশ নিয়ে থাকেন। বাজেটের আগে আজ আর্থিক সমীক্ষা পাশের দিন।
আর্থিক সমীক্ষাকে দেশের অর্থনীতির রিপোর্ট কার্ড হিসেবে ধরা হয়। শিল্প, কৃষি কোন ক্ষেত্রে কী পরিবর্তন এসেছে, কত আয় হয়েছে, কত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা গিয়েছে, উৎপাদনই বা কত বেড়েছে, আমদানি-রফতানি কোন পর্যায়ে রয়েছে, সেই সংক্রান্ত বিশদ পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়। তার নিরিখে আগামীদিনে কী কী পদক্ষেপ করতে হবে, তারও প্রস্তাব দেওয়া হয়। আর তার মধ্যেই থাকে জিডিপি বৃদ্ধির পরিসংখ্যান। এমনিতে করোনা ভাইরাসের জেরে লকডাউনের ধাক্কায় ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি সংকুচিত হয়েছিল ৭.৩ শতাংশ।
২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রথম কয়েক মাস লকডাউন এবং করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে আর্থিক কর্মকাণ্ড কার্যত থমকে গিয়েছিল। তলানিতে ঠেকেছিল চাহিদা। ক্রয়ক্ষমতা ও ভোগব্যয় হ্রাস পেয়েছিল। স্বভাবতই মুখ থুবড়ে পড়েছিল অর্থনীতি। ২০২১-২২ অর্থবর্ষের শুরুতেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর থেকে ভারতের অর্থনীতি কিছুটা অক্সিজেন পায়। ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা যায়।
আগের বছরের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবর্ষের সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে জিডিপি বেড়েছিল ৮.৪ শতাংশ। যা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম দ্রুত ছিল। সেই প্রবণতা আজকের পরিসংখ্যানেও উঠে এসেছে। আগামী অর্থবর্ষেও অর্থনীতির সেই উত্থান অব্যাহত থাকবে মনে করছে কেন্দ্র। আর্থিক সমীক্ষার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী অর্থবর্ষে ভারতে জিডিপি বৃদ্ধির হার হতে পারে ৮ থেকে ৮.৫ শতাংশ।
আগামী অর্থবর্ষের জন্য সাধারণ বাজেট পেশ করার আগে সংসদে আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্ট পেশ করে একথা জানান অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। শুধু তাই নয়, চলতি ২০২২ অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৯.২ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। রিপোর্টে দাবি করা হযেছে, করোনাভাইরাস টিকাকরণ, জোগান সংক্রান্ত খাতে সংস্কার, করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল, রফতানি বৃদ্ধি, মূলধনী খাতে ব্যয় বৃদ্ধির মতো বিষয়ের সমর্থন পাবে ভারতের অর্থনীতি।